মাহে রমজানের ফজিলত - রমজানে করনীয় ও বর্জনীয়
দেখতে দেখতে চলে এলো ২০২৪ সালের মাহে রমজান মাস। মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র মাস হলো রমজান মাস। তাই মাহে রমজানের ফজিলত অনেক। মহান আল্লাহ তায়া’লা রমজান মাসকে ফজিলত পূর্ন করে দিয়েছেন। মাহে রমজানের ফজিলত অনেক থাকার পাশাপাশি, রমজানে আমাদের জন্য রয়েছে কিছু করনীয় ও কিছু বর্জনীয়। তাই আজকের পোস্টে আমরা তুলে ধরব মাহে রমজানের ফজিলত - রমজানে করনীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে।
মাহে রমজানের ফজিলত - রমজানে করনীয় ও বর্জনীয় পোস্টটি পড়ে আমরা রমজানে নিজেদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব এটাই আশা করছি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক মাহে রমজানের ফজিলত - রমজানে করনীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মাহে রমজানের ফজিলত - রমজানে করনীয় ও বর্জনীয়
- মাহে রমজানের ফজিলত
- মাহে রমজানে করনীয় বিষয়
- মাহে রমজানে বর্জনীয় বিষয়
- শেষ কথা
মাহে রমজানের ফজিলত
মুসলিমদের ইমানের ৫ টি স্তম্ভের মধ্যে রোজা একটি স্তম্ভ। আর এই রোজা রাখতে হয় রমজান মাসে। এই মাসে মহান আল্লাহ তায়া’লা প্রতিটি নেক কাজের জন্য অনেক প্রতিদান দিয়ে থাকেন। আল্লাহ তায়া’লা এ বিষয় এ বলেন, “হে ইমানদারগণ, তোমাদের জন্য সিয়াম ফরজ করা হয়েছে যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা সফলকাম হতে পারো।” (সূরা বাকারা: ১৮৩)।
মাহে রমজানের ফজিলত মহান আল্লাহ তায়া’লা আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন এ মাসে কুরাআন নাজিল করে। আল্লাহ তায়া’লা বলেন, “ নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি কদরের রাতে। আর আপনি কি জানেন কদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার রাতের চেয়েও উত্তম। এ রাতে ফেরেশতাগণ ও রূহসমূহ নাজিল হয় তাদের রবের অনুমতিক্রমের প্রত্যেক দিক থেকে। সেখানে সূর্যোদয় পর্যন্ত শান্তি বর্ষিত হতে থাকে।’ (সুরা কদর : ১-৫)।
এই মাসে একটি রাত রয়েছে, যার নাম লাইলাতুলকদর। এই রাতের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়েও বেশি। মাহে রমজানের ৩০ টা দিনের ৩ টি ভাগ রয়েছে। ১ম ১০ দিন রহমত, ২য় ১০ দিন মাগফিরাত ও ৩য় ১০ দিন নাজাতের। এভাবেই মহান আল্লাহ তায়া’লা মাহে রমজানের ফজিলত অনেক গুন বাড়িয়ে দিয়েছেন।
মাহে রমজানে করনীয় বিষয়
মাহে রমজানের ফজিলত অনেক বেশি। এমাসের ফজিলত বর্ননা করে শেষ করা যাবে না। মাহে রমজানের ফজিলত যেমন অনেক বেশি তেমনি এ মাসে আমাদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু করনীয় বিষয়। মাহে রমজানে করনীয় কিছু বিষয় এর মধ্যে রয়েছে:
- তাকওয়া অর্জন করা: মাহে রমজানে আমাদের করণীয় বিষয় গুলোর একটি হলো তাকওয়া অর্জন করা।
- সিয়াম পালন করা: মাহে রমজানের সিয়াম পালন করা ফরজ। পূর্ববর্তী সকল নবীদের উম্মতের উপর আল্লাহ তায়া’লা রোজা ফরজ করেছিলেন। একই ভাবে আল্লাহ তায়া’লা ৪ টি ধাপে নবী (স:) এর উম্মতের উপরও রোজাকে ফরজ করেছেন।
- তারাবির নামাজ আদায় করা: তারাবির নামাজ ফরজ নামাজ না। এ মাসে অন্যান্য মাসের মত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পাশাপাশি এশার পর অতিরিক্ত কিছু নামাজ আদায় করতে হয়। এটাই তারাবির নামাজ।
- কুরআন তেলওয়াত করা: রমজান মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে৷ এজন্য আমাদের এ মাসে বেশি বেশি কুরআন তেলওয়াত করতে হবে।
- সাহরি করা: রমজানে সাহরি করা সুন্নত।
- ইফতার করা: রমজানে ইফতার করে রোজা ভাঙতে হয়। রমজানে অন্যকে ইফতার করানোর ভেতরও অনেক সাওয়াব রয়েছে।
এই ছিল রমজানের কিছু করনীয় বিষয়। এগুলো আমল করলে আমরা পরিপূর্ণভাবে রমজান মাসকে ব্যাবহার করতে পারব।
মাহে রমজানে বর্জনীয় বিষয়
মাহে রমজানের করনীয় বিষয় যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনি মাহে রমজানের বর্জনীয় বিষয় রয়েছে কিছু। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, মাহে রমজানের বর্জনীয় বিষয় গুলো সম্পর্কে।
- পাপ কাজ করা: এ মাসে যেমনি ১ টি নেক কাজের জন্য ৭০ টি নেকের সমান সাওয়াব পাওয়া যায়। তেমনি ১ টি পাপের জন্য ৭০ টি গুনাহ লিখা হয়। তাই আমাদের এ মাসে পাপ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
- মিথ্যা বলা: রমজানে মিথ্যা থেকে বিরত থাকতে হবে। নবী (স:) বলেছেন যে সৎ থাকতে হলে প্রথমে মিথ্যাকে ত্যাগ করতে হবে। রমজান মাস হতে পারে সবচেয়ে ভালো সময়, এখনই মিথ্যাকে ত্যাগ করুন।
- গীবত করা: গীবত একটি ভয়ানক গুনাহ। শুধুমাত্র মাহে রমজানেই না, কোনো মাসেই আমাদের গীবত করা উচিৎ না।
- গান না শোনা: যারা মোবাইলে গান শুনে অভ্যস্ত তারা এই মাসে গান শোনা থেকে বিরত থাকুন। এর পরিবর্তে কুরআন তেলওয়াত শুনুন।
এই মাসে আমাদের সব ধরনের গুনাহ থেকে দূরে থাকতে হবে। একটি ছোট আগুন যেমন একটি বড় আগুনে রূপান্তর হতে পারে তেমনি একটি ছোট গুনাহ থেকে একটি বড় গুনাহর কাজ হয়ে যেতে পারে। এজন্য মাহে রমজানের মত ফজিলতপূর্ণ একটি মাসে আমাদের উচিৎ খারাপ কাজ গুলো বর্জন করা।
শেষ কথা
মাহে রমজানে বেশ কিছু নফল আমল রয়েছে, এরমধ্যে রয়েছে তারাবির নামাজ আদায়, বেশি বেশি দোয়া পড়া, সাহেরি করা, ইফতার করা, কুরআন তেলওয়াত করা ইত্যাদি। রমজানে প্রতিটি ইবাদতের জন্য রয়েছে ৭০ গুন সাওয়াব।
রমজানে বেশি বেশি দান করা উত্তম। আশেপাশে যাদের আর্থিক সমস্যা তাদের সাহায্য করা উচিৎ। আল্লাহকে সব সময় মনে করতে হয় এই মাসে। আশা করি আমাদের আজকের মাহে রমজানের ফজিলত - রমজানে করনীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আপনাদের জন্য উপকার বয়ে আনবে।
মাহে রমজানের ফজিলত - রমজানে করনীয় ও বর্জনীয় পোস্টটি আপনার ভালো লাগলে পোস্টটি আপনার আপনজনদের সাথে সেয়ার করুন। রোজার শুভেচ্ছা জানাই সবাইকে, রজমান মোবারাক!
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url