রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা

রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা কি তা না জানা থাকলে এই পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন। এই পোস্টে আমরা রূপচর্চায় মধু কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে তথা রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা কি সে বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেছি। সুতরাং রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হলে আপনাদের এই সম্পূর্ণ পোস্টটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলতে হবে।
রূপচর্চায় অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস ও ক্ষতিকর পদার্থ নিজের ত্বকে ব্যবহার করে থাকেন। অনেক সময় না জেনে রূপচর্চার জন্য বিভিন্ন পদার্থ ব্যবহার করার ফলে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই কি ধরনের পদার্থ দিয়ে রূপচর্চা করলে ত্বকের কোন ক্ষতি হবে না তা সকলেরই জেনে রাখা উচিত। গবেষকদের মতে মধু দিয়ে কোন প্রকার ক্ষতি ছাড়াই রূপচর্চা করা সম্ভব। সেজন্য আজকের পোষ্টের মূল আলোচ্য বিষয় হলো, রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা। চাইলে আপনারা পুরো পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন। 

পোস্ট সূচিপত্র - রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা জেনে রাখুন

মধুতে কি কি উপাদান থাকে 

মধু খেতে কে না পছন্দ করে। মধু শুধু খেতেই মিষ্টি তা কিন্তু নয় এতে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তির নানা উপাদান রয়েছে। রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা জেনে নেওয়ার পূর্বে তাই মধুতে কি কি উপাদান রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। মধুতে প্রায় ৪৫ ধরনের খাদ্য উপাদান রয়েছে। মধুর মূল উপাদান গুলো: গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ, খনিজ লবণ, অ্যামিনো এসিড, এনজাইম, আয়োডিন, কপার ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাছাড়াও মধুতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬ রয়েছে। 
বলা বাহুল্য এই যে মধুতে কোন তেল চর্বি ও প্রোটিন নেই। সে কারণে মধু একটি মিষ্টি ও সুপেয় পানীয় হিসেবে সারা বিশ্বে সমাদ্রিত। মধুতে এমন কিছু এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা আমাদের দেহকোষকে ক্যান্সার ও হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে। মানসিক দুশ্চিন্তা ও অনিদ্রা প্রতিরোধে মধু কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ত্বকের যত্নেও মধুর জুড়ি মেলা ভার।  

মধু সম্পর্কে আল্লাহর বাণী 

রূপচর্চায় মধুর উপকারিতার কথা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন। তিনি বলেন, "আর তোমাদের প্রভু মৌমাছিকে বার্তা পাঠালেন, বাসা তৈরি করো পাহাড়ের মাঝে ও গাছের মধ্যে, আর তারা যে ঘর তৈরি করে তাতে। তারপর প্রত্যেক ফল ফলাদি থেকে খাও, অতঃপর অবনত চিত্তে তোমার প্রভুর রাস্তা অনুসরণ কর। তাদের পেট থেকে বেরিয়ে আসে এক ধরনের পানীয়, বিচিত্র যার বর্ণ, যাতে রয়েছে মানবজাতির জন্য রোগমুক্তি। নিঃসন্দেহে এতে নিশ্চিত নিদর্শন রয়েছে সেই সব মানুষদর জন্য যারা গভীর চিন্তা করে। (সুরা নাহল ৬৮-৬৯) স্বয়ং আল্লাহ মধুকে রোগ মুক্তির উপাদান হিসেবে ইরশাদ করেন। 

রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা 

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা নিশ্চয়ই রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা চেনে নেওয়ার জন্য এই পোস্টটি পড়া শুরু করেছেন। তাই আর দেরি না করে এবার চলুন জেনে নিই রূপচর্চায় মধু কি কি অবদান রাখে। 
  • শরীরের কোন স্থানে দাগ আক্রান্ত হলে সে জায়গাটি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। তারপর সেখানে মধুর প্রলেপ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিতে হবে। এক সপ্তাহ পর দেখবেন দাদ ভালো হয়ে ত্বক পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে। 
  • দুই চামচ মধুর সাথে এক চামচ বাদামের তেল ভালোভাবে মিশ্রিত করে তা সমস্ত মুখে ভালোভাবে মালিশ করুন। তারপর গরম পানি দিয়ে মুখ ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং খসখসে ভাব দূর হয়ে যাবে। 
  • চামড়ায় ভাঁজ পড়া প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে মধু। আটা, ময়দা, দুধ মধু একসাথে মিশ্রিত করে ভাঁজ পড়া চামড়ায় লাগালে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনার চামড়া কোমল ও মসৃণ হয়ে উঠবে। 
  • ত্বক ফর্সা করবার ক্ষেত্রেও মধু ব্যবহার করা যায়। শরীরের যে সমস্ত অংশ ফর্সা করতে চান সে সমস্ত স্থানে ২০ থেকে ২৫ দিন নিয়মিত মধুর প্রলেপ লাগাতে পারেন। এটি ত্বকের উচ্ছিষ্ট দাগ ও ছোট ছোট ক্ষত দূর করে ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা করে তুলবে। 
  • মধু চুলের খুশকি যেমন দূর করতে পারে তেমনি ত্বক থেকে অ্যালার্জিও চিরতরে দূর করে দিতে পারে। তাছাড়া আপনারা যদি মধু অলিভ অয়েল এর সাথে মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন তবে এটি চুল পড়া প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে। 
  • ব্রণ দূর করার জন্য চন্দন বাটার সাথে মধু মিশিয়ে ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগালে ব্রণের জীবাণু গুলো মরে যাবে এবং অনায়েসে সেই ব্রণ অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দূর হয়ে যাবে। 
  • ত্বকের সজীবতা রক্ষা করে যেকোনো ধরনের চর্মরোগ প্রতিরোধ করার জন্য মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি আমাদের দেহ ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

মধু খাওয়ার নিয়ম 

পোস্টের পূর্ববর্তী অংশ থেকে আপনারা ইতোমধ্যে রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা কি শেষ সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করেছেন। এবার কিভাবে সঠিক পদ্ধতিতে মধু কিভাবে খেলে উপকার পাবেন সেটি জেনে নিন। নিয়মিত সকাল বেলা খালি পেটে মধু খেলে তা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রত্যেকদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তাই এক দুই চামচ মধু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 
তাছাড়াও আপনারা চাইলে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ গরম পানির সাথে এক দুই চামচ মধু ও লেবুর রস একত্রে মিশ্রিত করে খেলে পেটের পীড়া ও বদজমের মত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এছাড়া পাউরুটি অথবা মাখন এর সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এ খাবারটি বেশ মুখরোচক হবে। বাদামের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে সেটি জম্পেশ একটি নাস্তা হয়ে যাবে। 

উপসংহার 

আজকের এই পোষ্টের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা। আপনারা কিভাবে মধু ব্যবহার করে নিয়মিত রূপচর্চা করতে পারেন সে বিষয়ে কিছু টিপস আমরা এই পোস্টে তুলে ধরেছি। আশা করি পোস্টে বর্ণিত টিপসগুলো রূপচর্চার ক্ষেত্রে আপনাদের যথেষ্ট কাজে দেবে। সেই সাথে মধু কিভাবে খাবেন সে নিয়মটিও আপনাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছি। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন তরকারি টিপস পেতে সর্বদা আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। আর এই পোস্টটি উপকারী মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url